দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের মূল বিষয় বদলে ঘুষ দাবির অভিযোগ
                                                    দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সহকারী পরিচালক (এডি) আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার চরম অপব্যবহার, ভয়ভীতি প্রদর্শন, সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে অর্থ দাবি এবং অভিযোগের বিষয়বস্তু পরিবর্তন করে উদ্দেশ্যমূলক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
সড়ক বিভাগের একজন কর্মকর্তা লিখিত আবেদন আকারে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। ক্ষুদে বার্তায় তিনি জানান, আজাদ সাহেবের নামে দুদকের চেয়ারম্যান ও ২ কমিশনার বরাবর প্রমাণসহ কয়েকবার চিঠি দিলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মনির হোসেন পাঠানের বিরুদ্ধে ‘টেন্ডার ও বিভিন্ন কাজে অনিয়ম’ অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেন দুদকের এডি আবুল কালাম আজাদ।
কিন্তু সেই অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু পরিবর্তন করে “দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ” শিরোনামে নতুনভাবে অভিযোগ তৈরি করেন দুদকের এডি আজাদ।
এমনকি কমিশনের অনুমোদন ছাড়াই নিজ উদ্যোগে সড়ক বিভাগের নতুন কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করে হাতে হাতে “জরুরী ও গোপনীয়” উল্লেখ করে নোটিশ প্রদান করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, দুদকে বক্তব্য গ্রহণের সাধারণ নোটিশ কখনোই “জরুরী ও গোপনীয়” হিসেবে ইস্যুর নিয়ম নেই। দুদকে বক্তব্য গ্রহণ ও শ্রবণের জন্য ডাকা পত্রগুলো হয় প্রকাশ্য পত্র।
অভিযোগকারী আরও উল্লেখ করেন, বক্তব্য গ্রহণের পর কর্মকর্তাদের হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে বরখাস্ত এক পরিচালক ও তার পরিচিত কয়েকজন ব্যক্তি মধ্যস্থতার দায়িত্ব নেন। মধ্যস্থতাকারীরা জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তৎকালীন সময়ে ১২ জন কর্মকর্তা ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রদান করে মোট প্রায় ৭০ লাখ টাকা দেন।
যেসব কর্মকর্তা অর্থ দেননি— তাদেরকে বর্তমানে পুনরায় ১০ লাখ টাকা করে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। অভিযোগকারী দাবি করেছেন, বরখাস্ত পরিচালক কে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে বড় অঙ্কের ফান্ড তৈরি করার জন্যই এই অর্থ দাবির চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। হুমকি দেয়া হচ্ছে, টাকা না দিলে পূর্বের ফাইলগুলো পুনরায় সক্রিয় করে এনফোর্সমেন্ট চালানো হবে সড়ক অফিসে।
এর ফলে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং স্বাভাবিক প্রশাসনিক কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এডি আবুল কালাম আজাদ ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রধান কার্যালয়ে বহাল আছেন। অথচ সরকারি বিধি অনুযায়ী একই কর্মস্থলে ৩ বছরের বেশি থাকার নিয়ম নেই। অভিযোগকারীদের দাবি, এই ব্যতিক্রম পরিস্থিতির কারণেই তিনি দুদকের অভ্যন্তরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্তভাবে কাজ করছেন। ওই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন দুদকেরই এক বরখাস্ত পরিচালক বলে বিভিন্ন সূত্রে তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) এর অফিস নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।