ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের শীর্ষে আইপিএল, বিপিএলের অবস্থান কোথায়?

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০১:৫১ পিএম

২০১২ সালে দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) যখন প্রথম শুরু হয়, তখন প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমী আশা করেছিলেন এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী টুর্নামেন্ট হয়ে উঠবে। কিন্তু তের বছর পরও বিপিএলের সামনে অন্ধকার দিকগুলোই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ সাতটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মধ্যে বিপিএল-এর নাম নেই, যা এক ধরনের হতাশাজনক বাস্তবতা।

বিশ্বজুড়ে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো। আইপিএল, পিএসএল, বিগ ব্যাশ, সিপিএল, এসএ২০, আইএলটি২০ সহ আরও নতুন লিগগুলোর বিকাশ চলমান। এদিকে, বিপিএল তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষত, সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এবং ক্রিকভিজের একটি বিশ্লেষণে বিশ্ব সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের তালিকায় স্থান হয়নি বিপিএলের।

বিশ্লেষণটিতে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ডে লিগগুলোর পারফরম্যান্স বিচার করা হয়েছে—প্রতি ম্যাচে গড় চার ও ছক্কা, শেষ ওভারে ম্যাচের রোমাঞ্চ, ডট বলের হার, ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা এবং কোন ধরনের বোলার বেশি সফল। এসবের মধ্যে আইপিএল শীর্ষে, পিএসএল এবং আইএলটি২০ যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এছাড়া, চতুর্থে আছে দ্য হান্ড্রেড, পঞ্চমে আছে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, ষষ্ঠ এবং সপ্তমে আছে যথাক্রমে এসএ২০ এবং বিগ ব্যাশ। তবে বিবিসির এই প্রতিবেদনে নাম নেই বিপিএলের। কিন্তু বিপিএল কেন পিছিয়ে পড়ল? বিপিএলের প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক তারকা ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতি, দুর্বল পরিকল্পনা, বাজেট সংকট, এবং টুর্নামেন্টের সময়সূচি বারবার পরিবর্তন। এমনকি মাঝে মাঝে স্পন্সরদের আস্থাহীনতার কারণে সামগ্রিক মান হ্রাস পাচ্ছে।

বিপিএলে আন্তর্জাতিক মানের সম্প্রচার, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং সঠিক মার্কেটিংয়ের অভাব প্রবল। আইপিএল বা পিএসএলের মতো টুর্নামেন্টে ম্যাচের গ্যালারিগুলো যখন পূর্ণ থাকে, বিপিএলে তা প্রায়শই ফাঁকা থাকে। দর্শকদের মাঠে আসার অনাগ্রহের অন্যতম কারণ হলো—অসংগত সময়সূচি পরিবর্তন, পেশাদার ব্যবস্থাপনার অভাব এবং নির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবে সংযোগ স্থাপনের ব্যর্থতা।

যদিও বিপিএল এখনো অনেক সমস্যায় জর্জরিত তবে বিপিএলের ভালো করার সুযোগ একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। সঠিক পরিকল্পনা, আন্তর্জাতিক মানের সম্প্রচার, নির্ভরযোগ্য স্পন্সরশিপ এবং খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক সঠিক সময়ে দেওয়ার নীতি কার্যকর করা গেলে বিপিএল আবারও সাফল্য অর্জন করতে পারে। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ এবং টুর্নামেন্টের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিপিএলকে আন্তর্জাতিক মানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এটি করতে হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঠিক দিকনির্দেশনা ও পেশাদার মনোভাব প্রয়োজন।