সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকদের খাবারের টাকা আত্মসাৎ করলেন বিভাগীয় তত্বাবধায়ক!

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম

অভিযুক্ত শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ। ছবি: সংগৃহীত

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত প্রশিক্ষণ ভাতা ও খাদ্য খরচের অর্থ যথাযথভাবে বিতরণ না করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কারখানার বর্তমান বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

কারখানা সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নমূলক ‘ইন-হাউজ ট্রেনিং’ আয়োজনের জন্য বরাদ্দ করা হয় ২০ লাখ টাকা। এতে কারখানার ২৮টি সপের ৬৫০ জন স্থায়ী শ্রমিক অংশ নেন। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০০ টাকা সম্মানী, ৮০ টাকা নাস্তা ও ৫০০ টাকা লাঞ্চসহ মোট ১,০৮০ টাকা। অথচ শ্রমিকদের হাতে শুধু সম্মানী বাবদ ৫০০ টাকা ও অল্প কিছু নাস্তা পৌঁছেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লাঞ্চ বাবদ বরাদ্দ পাওয়া অর্থ তারা পাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানান, প্রতি বছর প্রশিক্ষণের দিন তাদের তিন বেলা খাবারসহ নির্দিষ্ট ভাতা প্রদান করা হলেও এবার শুধু হাতে গোনা অল্প কিছু দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমছিল শ্রমিকদের মধ্যে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে একদিনের কর্মবিরতির হুমকি দেন তারা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বরাদ্দকৃত খাবারের অর্থ—প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা—দিয়ে একটি ‘ভুড়িভোজ’ আয়োজনের ঘোষণা দেন, যেখানে সবাইকে একসাথে খাওয়ানোর পরিকল্পনা করা হয়।

তবে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রেড ইউনিয়নের একাধিক নেতা। তাদের বক্তব্য, “প্রশিক্ষণের বরাদ্দকৃত অর্থ প্রশিক্ষণগ্রহণকারীদের জন্য নির্ধারিত। এই অর্থ দিয়ে সকলকে একসাথে খাওয়ানো নিয়মবহির্ভূত। তাছাড়া এমন সিদ্ধান্তের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, “আমি দায়িত্ব নেয়ার আগে বরাদ্দকৃত ২০ লাখ টাকার মধ্যে ১০ লাখ খরচ হয়ে গেছে। বাকি ১০ লাখ টাকায় শ্রমিকদের সম্মানী দেয়া হয়েছে। খাবারের টাকা জমা আছে, সেটি দিয়ে আমরা সকলকে নিয়ে একদিন একত্রে খাওয়ার আয়োজন করব।” তিনি আরও দাবি করেন, “এই নতুন পদ্ধতি আমরা চালু করছি, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। এতে কারো আপত্তির সুযোগ নেই।”

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ এবং এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রশিক্ষণের নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন শ্রমিকরা।