গেট ভেঙে সচিবালয়ে শিক্ষার্থীদের ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ জেট বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীসহ বহু প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সচিবালয়ে গেট ভেঙে ঢুকেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটে।
বিক্ষোভকারীরা সচিবালয়ের ১ নম্বর গেট ভেঙে ও দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। সংঘর্ষ চলাকালে সচিবালয়ের ভেতরে থাকা বিভিন্ন যানবাহন, এলজিআরডি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে ভাঙচুর চালান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে।
এর আগে দুপুরে মিছিল সহকারে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন শত শত শিক্ষার্থী। এতে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, সোমবারের বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক মানুষ, যাদের মধ্যে প্রায় ৭০ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই শোকাবহ ঘটনার মধ্যেই মঙ্গলবার এইচএসসি ও সমমানের কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষার্থীদের দাবি, গভীর রাতে পরীক্ষার স্থগিতাদেশ জানানো হয়, যা অনেকেই জানতে পারেননি। ফলে অনেকে সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে বিপাকে পড়েন।
এ ঘটনার জন্য শিক্ষার্থীরা দায়ী করছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরারকে। তার পদত্যাগের দাবি জানিয়ে সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হন তারা। এর আগে সকালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের গোলচত্বরে শিক্ষার্থীরা জমায়েত হন। ‘বিচার চাই না, সন্তানের লাশ চাই’, ‘সঠিক লাশের হিসাব চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সড়কের ওপর বসে প্রতিবাদ জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির প্রেক্ষিতে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—নিহতদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ, আহতদের নির্ভুল তালিকা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ, শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা এবং দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।