দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন: চলছে ভোটগ্রহণ

লালসবুজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাকসু (কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ, যা চলবে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে স্থাপিত ২২৪টি বুথে শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এর আগে, বুধবার রাতে ব্যালট বাক্স সরবরাহ করা হয় এবং সকালে ব্যালট বিতরণ সম্পন্ন হয়।

নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে ১৫০০ পুলিশ সদস্য, ৭ প্লাটুন বিজিবি এবং ৫ প্লাটুন আনসার। পাশাপাশি যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নিরাপত্তার পাশাপাশি যান চলাচল ও দোকানপাট নিয়ন্ত্রণেও নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা।

নির্বাচনের সময় ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গেট বন্ধ থাকবে, শুধুমাত্র মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন গেট এবং প্রান্তিক গেট খোলা থাকবে।

১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের প্রধান গেট, টারজান পয়েন্ট, মুরাদ চত্বর, পুরাতন পরিবহন চত্বর ও প্রান্তিক গেটসংলগ্ন সব দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আবাসিক হলের ক্যান্টিন ও অভ্যন্তরীণ দোকান খোলা থাকবে এবং খাবারের পর্যাপ্ত মজুদ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে জরুরি বিভাগ ছাড়া মোটরসাইকেল চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল স্টিকার এবং নির্বাচন কমিশনের স্টিকারযুক্ত যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে।

এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৮ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে: সহসভাপতি (ভিপি) পদে: ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে: ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে: ৬ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে: ১০ জন। বাকি পদগুলোতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।

দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

১৯৯১ সালের পর দীর্ঘ তিন দশক ধরে বন্ধ থাকা এই নির্বাচন নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা আবারও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছেন।